ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে চাচ্ছেন কিন্তু সংশোধন আবেদন করার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে জানেন না? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই।
ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ভুল থাকলে সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে হয়। সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। সংশোধন আবেদনের সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা না দিলে আবেদনটি অনুমোদন হবেনা।
তাই, এনআইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আবেদন করার সময় কি কি ডকুমেন্ট লাগবে জানা আবশ্যক। তো চলুন, এই বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
এই পোস্টের বিষয়বস্তু
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে জন্ম নিবন্ধন সনদ, পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ড, পরীক্ষার সনদপত্র এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ডকুমেন্ট লাগে। এছাড়া, আপনি ভোটার আইডি কার্ডের কোন তথ্য সংশোধন করবেন তার উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট লাগবে।
ভোটার আইডি কার্ডে আপনার নাম সংশোধন করতে যেসব ডকুমেন্ট লাগবে, আপনার পিতা-মাতার নাম সংশোধন করার ক্ষেত্রে সেসব ডকুমেন্ট লাগবেনা। তবে, ভোটার আইডি কার্ডের যেকোনো তথ্য সংশোধন করার জন্য সাধারণত যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়, তার একটি বিস্তারিত তালিকা নিম্নরূপ –
- পাসপোর্ট
- চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত পারিবারিক সনদপত্র
- সন্তানের বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি
- উপজেলা নির্বাচন অফিসারের প্রতিবেদন
- পিতা/মাতার ভোটার আইডি কার্ড
- জমির দলিল পত্র (যদি থাকে)
- হলফ নামা
- সন্তানের জাতীয় পরিচয়পত্র
- বয়স প্রমাণের মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট (সিভিল সার্জন কর্তৃক)
- বিয়ের কাবিননামা
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- তদন্ত প্রতিবেদন
- যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
- ইউটিলিটি বিলের কপি
- জন্ম নিবন্ধন
ভোটার আইডি কার্ডের যেকোনো তথ্য সংশোধন করতে এই তালিকার সবগুলো ডকুমেন্ট লাগবেনা। একেক ধরনের তথ্য সংশোধন করতে তালিকায় থাকা একেকটি ডকুমেন্ট লাগবে। এসব ডকুমেন্ট জমা দেয়া হলে ডকুমেন্ট অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে এরপর সংশোধন আবেদন অনুমোদন বা বাতিল করা হবে।
ভোটার আইডি কার্ড নাম/পিতা-মাতার নাম/জন্ম তারিখ/পেশা/বৈবাহিক অবস্থা সহ অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে যেসব ডকুমেন্ট লাগে তা নিচে আলাদা করে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
নিজের নাম সংশোধন
ভোটার আইডি কার্ডে যদি আপনার নাম ভুল থাকে কিংবা নামের বানান ভুল থাকে, তাহলে সংশোধন করার জন্য আবেদন করা আবশ্যক। আইডি কার্ডে নিজের নাম সংশোধন না করলে বিভিন্ন পরীক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। নিজের নাম সংশোধন করার জন্য নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো লেগে থাকে।
- পাসপোর্ট
- সন্তানের বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
- হলফ নামা
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- জন্ম নিবন্ধন
- যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
- এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি
- তদন্ত প্রতিবেদন
- উপজেলা নির্বাচন অফিসারের প্রতিবেদন
- বিয়ের কাবিননামা
তবে, আপনার নামের বাংলা এবং ইংরেজি বানানের মিল না থাকলে নামের বানান মিলকরণের জন্য আলাদা করে কোনো ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবেনা।
জন্ম তারিখ সংশোধন
ভোটার আইডি কার্ডে যদি জন্ম তারিখ/মাস কিংবা বছর ভুল আসে, তাহলে সংশোধন আবেদন করার মাধ্যমে বয়স সংশোধন করতে হবে। বয়স সংশোধন করার জন্য নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করতে হবে। এসব ডকুমেন্ট দ্বারা আপনার বয়স যাচাই করে এরপর আবেদন অনুমোদন করা হবে।
- পাসপোর্ট (যদি থাকে)
- এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি
- ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে)
- যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
- চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত পারিবারিক সনদপত্র
- বয়স প্রমাণের মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট (সিভিল সার্জন কর্তৃক)
- জন্ম নিবন্ধন সনদ পত্র
পিতা/মাতার নাম সংশোধন
এনআইডি কার্ডে যদি আপনার পিতা/মাতা কিংবা দুজনের নাম ভুল থাকে বা নামের বানান ভুল থাকে, তাহলে তা সংশোধন করার জন্য যেসব ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হল –
- পিতা/মাতার ভোটার আইডি কার্ড
- ভাই-বোনের বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- পাসপোর্ট
- যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র
- জন্ম নিবন্ধন সনদ পত্র
- বিয়ের কাবিন নামা (যদি থাকে)
- এমপিও/ সার্ভিস বইয়ের কপি
- ভাই-বোনের ভোটার আইডি কার্ড
স্বামী/স্ত্রীর নাম সংশোধন
বিবাহিত হওয়ার আগে এনআইডি কার্ড হয়েছে, বিবাহিত হওয়ার পর স্বামী/স্ত্রীর নাম আইডি কার্ডে যুক্ত করতে চাইলে আইডি কার্ড সংশোধন করতে হবে। অথবা, ডিভোর্স হয়ে গেলে স্বামী/স্ত্রীর নাম আইডি কার্ড থেকে বাদ দিতে চাইলেও সংশোধনের আবেদন করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো যুক্ত করতে হবে।
- বিয়ের কাবিননামা বা তালাকনামা
- সন্তানের ভোটার আইডি কার্ড (যদি থাকে)
- সন্তানদের বোর্ড পরীক্ষার সনদপত্র (যদি থাকে)
- অথবা অন্যান্য প্রমাণপত্র
নতুন বিবাহ হলে এবং স্বামী/স্ত্রীর নাম যুক্ত করতে চাইলে বিয়ের কাবিননামা/নিকাহনামা যুক্ত করতে হবে। অপরদিকে, ডিভোর্স হলে তালাকনামা যুক্ত করতে হবে।
বর্তমান ঠিকানা সংশোধন
চাকরি বা অন্য কোনো কারণে যদি স্থায়ী ঠিকানা ছেড়ে অন্য কোথাও থাকতে হয় এবং সেখানে ভোট দিতে চান, তাহলে বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে –
- জন্ম নিবন্ধন সনদ
- ইউটিলিটি বিলের কপি
- জমির দলিল পত্র (যদি থাকে)
- অন্যান্য ডকুমেন্ট
- ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত সনদপত্র
- পাসপোর্ট (যদি থাকে)
শেষ কথা
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে তার কয়েকটি তালিকা উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। যারা আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে চান, তাদের জন্য পোস্টটি অনেক সহায়ক হবে।